ঢাবি প্রতিনিধি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সদ্য সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, রাজপথে আন্দোলন করতে গিয়ে বারবার মার খেয়েছি কিন্তু স্বৈরশাসকের কাছে হার মানিনি। আমাদের সংগঠনের (ছাত্র অধিকার পরিষদ) পাঁচজন নেতাকর্মী বেঁচে থাকলেও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
রোববার (১৯ জুলাই) রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ আয়োজিত নোয়াখালীসহ সারাদেশে পুলিশি হয়রানির প্রতিবাদ ও নাগরিক অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হোসেন, মো. আতাউল্লাহ, রাশেদ খাঁনসহ সংগঠনটির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
নুরুল হক নুর বলেন, সারাদেশে বিরোধী মতের মানুষকে হয়রানি করার জন্য সরকার পুলিশকে লেলিয়ে দিয়েছে। বিনা অপরাধে শুধু বিরোধী দল করার জন্য তাদের অন্যায়ভাবে পুলিশি হয়রানি করা হচ্ছে। আমরা যখন পুলিশকে আমাদের নেতাকর্মীদের ছাড়িয়ে দেয়ার জন্য ফোন দেই তখন পুলিশের কথা শুনে মনে হয় পুলিশ সরকারি দলের বড় নেতা।
তিনি আরও বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের কেন আটক করা হয়, সে কথা বললে পুলিশ আমাদের বলে, তারা সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত। আমরা বলে দিতে চাই, দেশের মানুষের পক্ষে, অধিকার আদায়ের পক্ষে, দেশের সার্বভৌমত্বের পক্ষে এবং গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলা যদি সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড হয় তাহলে ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতারা আজকে থেকে সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী কাজই করবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে নূর বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যতদিন নির্বাচন হয়েছে ততদিন দেশে মোটামুটি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয়েই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে কাজ করেছিল। যখন তারা ক্ষমতায় আসে তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা তোলে দিতে চেয়েছে। দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করতে হলে আবারও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু করতে হবে। অন্যথায় দেশে স্বৈরশাসকের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত হবে।
চট্টগ্রাম বন্দরে ভারতকে অগ্রাধিকারের কথা তোলে তিনি বলেন, সরকার দেশের মধ্যে অন্যায় কাজ করতে করতে আন্তর্জাতিক বিশ্ব থেকে দেশকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলছে। যার ধরুন সরকার বিদেশি কারও কথার বিরুদ্ধে কথা বলতে পারে না। তারা চট্টগ্রাম বন্দরে ভারতের জাহাজের পণ্য অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে খালাস করার যে চুক্তি করেছে তাতেই বুঝা যায়, সরকার দেশের প্রতি কতটুকু দায়বদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার যদি দেশের মানুষকে অবাধে মিছিল-মিটিং করার সুযোগ না দেয় তাহলে দেশে জনবিক্ষোভ তৈরি হবে। জন-বিক্ষোভের আগেই সরকারকে মানুষের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। অন্যথায়, ছাত্রজনতা কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে।’